বছর ঘুরে আবারও রমজান চলে এসেছে। আরে রমজানকে গিরা আমাদের মনে অনেকগুলো প্রশ্ন দাগ কেটে যায়। তার মধ্য হতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ রমজান বিষয়ক প্রশ্নোত্তর নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হলাম। বেশি কথা না বলে দেখিনি রমজান বিষয়ক প্রশ্নোত্তর গুলো। এগুলো আমার নিজের থেকে বলিনি এগুলো বিভিন্ন রেফারেন্স থেকে নেওয়া তাই ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
প্রশ্ন : যদি সুবহে সাদেক হয়ে যায় বা ফজরের আযান শুরু হয়ে যায় আর মুখে খাবার বা পানীয় থাকে তাহলে কি করবে?
উত্তর : মুখে যেটুকু খাবার বা পানি আছে তা ফেলে দেবে। ফলে তার রোযা শুদ্ধ হয়ে যাবে। এটা ফকীহদের ঐক্যমতের রায়।
প্রশ্ন : কিডনী পরিষ্কার করলে, চোখে বা কানে ড্রপ দিলে, দাঁত উঠলে, ক্ষতস্থানে ব্যান্ডেজ লাগালে, রক্ত পরীক্ষা করার জন্য রক্ত নিলে রোযা কি ভেঙ্গে যাবে বা ক্ষতি হবে?
উত্তর : না, এতে রোযা ভাঙ্গবেও না ক্ষতিও হবে না।
প্রশ্ন : রোযাদার যদি আহত হয় বা নাক দিয়ে রক্ত ঝরে কিংবা কোন কারণে অনিচ্ছাকৃত ভাবে গলায় পানি বা তেল ঢুকে যায় তাহলে রোযার কি হবে?
উত্তর : মুখে যেটুকু খাবার বা পানি আছে তা ফেলে দেবে। ফলে তার রোযা শুদ্ধ হয়ে যাবে। এটা ফকীহদের ঐক্যমতের রায়।
প্রশ্ন : কত বছর হলে মুসলমানদের রমজান মাসে রোজা রাখা ফরজ হয় ?
উত্তর : রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘সাত বছর বয়স হলে তোমরা তোমাদের সন্তানদের নামাজের জন্য নির্দেশ দাও। বয়স ১০ বছর হলে (নামাজ না পড়লে) তাদের প্রহার করো এবং তাদের বিছানা পৃথক করে দাও।’ (মুসনাদে আহমদ : ৬৭৫৬)। সাত বছর বয়সে নামাজের নির্দেশ দেয়া হবে, ১০ বছর বয়সে প্রহার করা হবে এবং বালেগ বা প্রাপ্তবয়স্ক হলে অবশ্যই নামাজ আদায় করতে হবে। বিভিন্ন আলামত প্রকাশ বা বয়স ১৫ হলে বালেগ হয়েছে বলে ধরে নেয়া হবে। রোজার ক্ষেত্রে একই নিয়ম। সাত বছর বয়সে রোজা রাখা কঠিন হলেও রোজা রাখার চর্চা শুরু করতে হবে; কিন্তু বালেগ হলে অবশ্যই রোজা রাখতে হবে। এজন্য আগে থেকেই রোজা রেখে ফরজ রোজার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে।
আর বালেগ হওয়ার সর্বত্তোম আলামত হল এহতেলাম বা স্বপ্নদোষ হওয়া। আর কারো যদি তা না হয় তাহলে পুরুষের বেলায় ১৫ বছর আর মহিলাদের বেলায় ১২ বছর ধরে নিবে। (নূরুল ইযাহ) বিঃদ্রঃ কেউ প্রাপ্তবয়স্ক হলে তার শরীরে হঠাৎ একটা অস্বাভাবিক পরিবর্তন দেখা যায়, এটাও বালেগ হওয়ার লক্ষন।
প্রশ্ন : চোখের অশ্র“ যদি গলায় প্রবেশ করে তাহলে কি রোযা ভেঙ্গে যাবে?
উত্তর : না, এতে রোযা ভাঙ্গবে না।
প্রশ্ন : রোযাদার ব্যক্তি যদি আতরের গন্ধ, চন্দন কাঠ বা আগরবাতির ঘ্রাণ শুঁকে তাহলে কি হবে?
উত্তর : এতে রোযার কোন ক্ষতি হবে না। তবে ধোঁয়া যাতে গলায় প্রবেশ না করে সে ব্যাপারে সাবধান থাকতে হবে।
প্রশ্ন : রোজা থাকালীন অবস্থায় যদি হস্তুমৈথুন করা হয় তাহলে কি রোজা নষ্ট হয়?
উত্তর : রোযা থাকা কালিন অবস্থায় যদি হস্ত মৈথুন করেন তবে আপনার রোজা সম্পুর্ন নষ্ট হয়ে যাবে।
প্রশ্ন : কেউ যদি রোজা রাখা অবস্তায় তার সপ্ন দোষ হয় , তাহলে কি তার রোজা হবে , না রোজা নষ্ট হয়ে যাবে?
উত্তর : রোজা অবস্থায় দিনের বেলায় স্বপ্নদোষ হলে রোজার কোনো ক্ষতি হবে না। কারণ এটি ইচ্ছাধীন বা নিয়ন্ত্রণাধীন নয়। স্বপ্ন যেহেতু সজ্ঞান নয়; তাই স্বপ্নদোষ হলে রোজা ভাঙ্গবে না; স্বাভাবিক ভাবেই রোজা পূর্ণ করবে। কাযা কাফফারা কিছুই প্রয়োজন হবে না। (ফাতাওয়ায়ে শামী)।
প্রশ্ন : রোজা অবস্থায় কোনো ছোট বাচ্চা আমাকে চুম্বন করলে আমার রোজা নষ্ট হবে কি?
উত্তর : জনাব, ছোট বাচ্চাদের কেন বড়দের যেমন আপনার স্ত্রীকে চুম্বন করতে পারেন। এতে রোযা নষ্ট হবেনা যতক্ষন না আপনার বির্যপাত হয়। আর বির্যপাত হলে ছোট- বড় সকল ক্ষেত্রেই রোযা নষ্ট হবে। আল্লাহ অধিক জানেন।
প্রশ্ন : সপ্নদোষ হলে ফরজ গোসল না করে যদি সেহরি খেয়ে রোজা রাখে তাহলে কি তার রোজা হবে?
উত্তর : হ্যা, রোযা হবে। তবে এই অবস্থায় যদি ফযরের ওয়াক্ত চলে যায়, তাহলে নামায না পড়ার গোনাহ হবে। আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত, রামাযানের রাত্রিতে স্ত্রী সহবাসের পর গোসল করে পবিত্র হওয়ার আগেই কখনও কখনও রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর সকাল (ফজর) হয়ে যেত। অতঃপর সকাল হয়ে যাওয়ার পর তিনি গোসল করতেন এবং রোজা রাখতেন। (বুখারী ও মুসলিম)
চেষ্টা করলে সফল অবশ্যই হওয়া যায়। চেষ্টা নতুন কিছু করার।