ভালো মেহেদী কিনবেন নয়তো মেহেদীতে থাকা এসিড আপনার হাত অবস্থা খারাপ করে ফেলতে পারে।

ভালো মেহেদী কিনবেন। নয়তো মেহেদীতে থাকা এসিড আপনার হাত অবস্থা এইরকম হতে পারে। আর হা মেয়াদ দেখে কিনবেন।ভেজাল মেহেদী চিনবেন কী করে?

মেহেদীর রঞ্জকঃ মেহেদী পাতায় কমলা রং এর এক ধরণের রঞ্জক পদার্থ থাকে যাকে লসোন(Lawsone/Hennotannic acid) বলে।
একমাত্র ল্যাব টেষ্টেই নিশ্চিতভাবে বলা সম্ভব মেহেদীতে কোন কোন কেমিক্যাল মেশানো হয়েছে।

আসল মেহেদী চেনার উপায়ও

১। খাঁটি মেহেদী কখনোই কালো রং এর হয়না।সকল কালো মেহেদীই ভেজাল বা কেমিক্যাল মিশ্রিত।

২। প্রাকৃতিক মেহেদী কখনোই ৫মিনিটে গাঢ় টুকটুকে রং দেয়না।মেহেদীর রং হাতে ঢুকতে কয়েকঘন্টা সময় Mলাগে এবং পরবর্তী ২৪-৪৮ঘন্টায় তা অক্সিডাইজড(বাতাসের অক্সিজেনের সাথে বিক্রিয়া করে) হয়ে গাঢ় রং হয়।

৩। মেহেদীর রসের স্বাভাবিক রং ন্যাচারাল কমলা(CI-75480)।মেহেদী হাত দিয়ে ধরা মাত্রই যদি হাত লাল বা খয়েরী লাল হয়ে যায় না।

মেহেদীতে কী কী ভেজাল মেশানো হয়ঃ–

১। কার্বোলিক এসিডঃ এটা ফেনল বা সাপ তাড়ানোর ঔষধ হিসাবে বেশী পরিচিত। এটা ত্বকের কোষগুলোকে মেরে ফেলে এবং এর প্রতিরোধক ক্ষমতাকে ধ্বংস করে;ফলে মেহেদীর রং সহজেই ত্বকে প্রবেশ করে ও দ্রুত রং দেয়।

২। পিপিডিঃ Para-Phenylene-Diamine এটা কালির রং।সকল কালো রং এর মেহেদীতে পিপিডি আছে। ন্যাচারাল মেহেদী কখনোই কালো রং এর হয়না। পিপিডি মারাত্মক অ্যালার্জি তৈরী করতে পারে।

৩।রেড অক্সাইডঃএটা ফার্নিচারের রং করার কাজে ব্যবহৃত লালচে খয়েরী রং এর পাউডার।

৪।ক্ষতিকর দ্রাবকঃ কেরোসিন,গ্যাসোলিন,তার্পিন তেল,কর্পুর… ইত্যাদি। এসব দ্রাবক মেহেদীর রঞ্জক লসোনের ঘনত্ব বাড়ায়,ফলে মেহেদীর রং গাঢ় হয়।

৫।কেমিক্যাল ডাইঃমেহেদীর রং গাঢ় ও দ্রুত করার জন্য কাল,লাল বা খয়েরী লাল রং এর ডাই ব্যবহার করা হচ্ছে।

নকল মেহেদী দিলে আপনার হাতের অবস্থা অবস্থা এমন হতে পারে তাই সাবধানতা অবলম্বন করা আবশ্যক। 

 

নকল মেহেদী

নকল মেহেদী

এসব কেমিক্যালের ক্ষতিকর দিকগুলো কী কী?-

১।ত্বকের অ্যালার্জিঃ-এই ক্ষতিটা সবচেয়ে বেশী দেখা যায়।এতে ত্বক চুলকায়,লাল হয়,ফুলে উঠে,চামড়া উঠে যায় বা ফোস্কা পড়ে(contact dermatitis)। পরবর্তীতে ত্বকে কালো দাগ(post inflammatory hyperpigmentation) ও scarring হতে পারে।অনেক সময় তাৎক্ষণিক কোন সমস্যা না হলেও ১-৬ সপ্তাহ পরও সমস্যা হতে পারে(delayed hypersensitivity reaction)।এমনকি প্রথমবার লাগিয়ে কিছু না হলেও দ্বিতীয়বার লাগানোর পরে প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে (sensitization)।

২। ত্বক পুড়ে যাওয়াঃ-ফেনল ত্বক পুড়িয়ে দিতে পারে।কম ঘনত্বের ফেনল ত্বক না পুড়ালেও ত্বকের কোষকে মেরে ফেলতে পারে।

৩। ফেনল,কেরোসিন,তারপিন,পিপিডি ইত্যাদি ত্বক থেকে দ্রুত শোষিত হয়ে সারাদেহে ছড়িয়ে পড়ে। বিশেষতঃ কিডনী ও লিভারের জন্য এরা মারাত্মক ক্ষতিকর।

৪। কর্পুরের ঘ্রাণ তাৎক্ষণিকভাবে শ্বাসতন্ত্রের ক্ষতি করে। বমিও হতে পারে।

৫। টেক্সটাইল ডাই ক্যান্সারসহ নানারকম অসুখ তৈরী করে বলে খাদ্য ও প্রসাধনীতে এর ব্যবহার নিষিদ্ধ।

৬। মৃত্যুঃ Anaphylactic reaction বা তীব্র মাত্রার অ্যালার্জি হয়ে তাৎক্ষণিকভাবে মানুষ মারা য়েতে পারে।পিপিডির কারণে এভাবে রোগী মারা যাওয়ার ইতিহাস রয়েছে।

হাতে মেহেদী লাগানো একটা শৈল্পিকচর্চ্চা। ধৈর্য্ধারণ ও নির্ভেজাল হওয়া শিল্পচর্চ্চার পূর্ব শর্ত।আসুন আমরা তাজা মেহেদী হাতে লাগাই আর কেমিক্যালযুক্ত মেহেদী বর্জন করি।

পোস্ট ক্রেডিটঃ Pi Science

Share the article..

Leave a Comment