ইউটিউব থেকে আয় করার সহজ উপায় ২০২২

হ্যালো প্রিয় ভিজিটর আশা করি আপনারা সকলে ভালো আছেন। আপনাদেরকে আবারো আমাদের সাইটে আমার পক্ষ থেকে আন্তরিক স্বাগতম জানাই। আজকের পোস্ট এ আমি আপনাদের সাথে ইউটিউব থেকে কিভাবে টাকায় আয় করা যায় এই বিষয় টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো। তো চলুন দেরি না করে পোস্ট টি শুরু করা যাক।

বর্তমানে অনেকেই ইউটিউবিং করে টাকা আয় করছেন। আর অনেকে এই দিকে নতুন যেতে চাচ্ছেন। তো নতুন রা যাওয়ার আগে এখান থেকে ইনকামের উপায় গুলো আগে যেনে নিন।

 

১। ইউটিউব পার্টনার প্রোগ্রাম থেকে আয়

ইউটিউব পার্টনার প্রোগ্রামে যুক্ত হওয়ার মাধ্যমে শুধুমাত্র এডসেন্স নিয়ে টাকা আয় করা যায় তা কিন্তু নয়। পাশাপাশি আরও অনেক সুবিধা পাওয়া যায় ইউটিউব পার্টনার প্রোগ্রামে যুক্ত হয়ে।

ইউটিউব পার্টনার প্রোগ্রামে যুক্ত হওয়ার মাধ্যমে ইউটিউব প্রিমিয়াম সাব-স্ক্রিপশন ফিস, সুপার চ্যাট, চ্যানেল মেম্বারশিপ প্রোগ্রাম ইত্যাদি সুবিধাগুলো পাওয়া যায়। ইউটিউব পার্টনার প্রোগ্রামে যুক্ত হতে আপনার দরকার হবে ১ টি ইউটিউব চ্যানেলের।

ইউটিউব পার্টনার প্রোগ্রামে যুক্ত হতে আপনার ইউটিউব চ্যানেলে গত ১২ মাসে ১,০০০ সাব-স্ক্রাইবার ও ৪,০০০ ঘন্টা ভিডিও ওয়াচটাইম থাকতে হবে। এ ছাড়াও ইউটিউব চ্যানেলে কোনো প্রকার কপিরাইট স্ট্রাইক থাকা যাবে না।

ইউটিউব চ্যানেল পার্টনার প্রোগ্রামের ব্যাপারটি মনিটাইজেশন নামেই পরিচিত। আপনার ইউটিউব চ্যানেল মনিটাইজেশন এর জন্য উপযুক্ত কি না, তা জানতেঃ

⇨ইউটিউব স্টুডিও এর মধ্যে প্রবেশ করুন।

⇨বাম পাশের মেন্যু থেকে Monetisation–এ ক্লিক করুন।

⇨তারপর আপনার চ্যানেলের মনেটাইজেশন এলিজিবিটি স্ট্যাটাস দেখতে পাবেন।

⇨আপনার চ্যানেল মনেটাইজেশন এর জন্য উপযুক্ত হলে Apply Now বাটন দেখতে পাবেন।

⇨Apply Now বাটনে ক্লিক করে আপনার ইউটিউব চ্যানেল Monetisation এর জন্য Apply করতে পারেন।

 

২। প্রোডাক্ট বিক্রি মাধ্যমে ইউটিউব থেকে আয়

বিভিন্ন পণ্য বিক্রি বর্তমানে ইউটিউবারদের ও পাবলিক ফিগারদের আয়ের অন্যতম উৎস হয়ে উঠেছে। আপনার চ্যানেলের যদি যথেষ্ট পরিমাণে ফ্যান ফলোয়ার থাকে, যারা আপনার কাছ থেকে কিনতে আগ্রহী হবে, সে ক্ষেত্রে ইউটিউব চ্যানেলের সাবস্ক্রাইবদের কাছে বিক্রি করতে পারেন মার্চেন্ডাইজ।

আপনার ইউটিউব চ্যানেলও যেহেতু একটি ব্র্যান্ড, সেক্ষেত্রে বিক্রি হওয়া মার্চেন্ডাইজ-এ নিজস্বতা রাখার চেষ্টা করুন। ফলে চ্যানেল হিসেবে আপনার প্রোমোশন হবে ফ্রিতেই।

এ ছাড়াও আপনি ভিউয়ারদের কাছ থেকেও পণ্য নিয়ে মতামত নিতে পারেন। ফলে খুব সহজেই পণ্য বিক্রি করা যাবে। মার্চেন্ডাইজ বিক্রি করতে পারেন অনলাইন শপ খুলে কিংবা ফেসবুক পেজেও।

 

৩। ভিডিও এডিটিং সার্ভিস দিয়ে আয়

আপনি যেহেতু ইউটিউবে ভিডিও আপলোড করবেন, সে ক্ষেত্রে ভিডিও এডিটিংয়ে পারদর্শীতা থাকার কথা। আপনি যদি মনে করেন, আপনার ভিডিও এডিটিং অন্যদের চেয়ে ভালো ও আপনি এই কাজে পারদর্শী, সে ক্ষেত্রে আপনি ভিডিও এডিটিং সার্ভিস প্রদান করতে পারেন।

অর্থের বিনিময়ে ভিডিও এডিটিং সার্ভিস প্রদান করতে পারেন অন্য ইউটিউবারদের। এছাড়াও বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং প্লাটফর্মেও ভিডিও এডিটিং এর কাজ করে ভালোই আয় বা ইনকাম করা যায়।

বর্তমানে ভিডিও এডিটিং অত্যন্ত ডিমান্ডিং একটি সার্ভিস। তাই এই বিষয়ে পারদর্শিতা থাকলে অন্যদের সহায়তা করে আয় করতে পারেন।

 

৪। প্রোডাক্ট রিভিউ ও অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে ইউটিউব থেকে আয়

কোনো নতুন পণ্য সম্পর্কে জানতে বা প্রডাক্ট কেনার সিদ্ধান্ত নিতে বিশাল অঙ্কের ভিউয়ার ইউটিউবের উপর নির্ভর করে। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে প্রোডাক্ট রিভিউ ও অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে ইউটিউব থেকে সহজেই আয় করা সম্ভব।

বর্তমানে ইউটিউবে সকল ধরণের প্রোডাক্ট রিভিউ এর প্রচুর ডিমান্ড রয়েছে। এসব প্রোডাক্ট রিভিউ এর ডেসক্রিপশনে কেনার অ্যাফিলিয়েট লিংক প্রদান করার মাধ্যমে ভিউয়ার এর বায়িং ডিসিশন সহজ করার পাশাপাশি আপনিও কমিশন পেতে পারেন।

অন্য প্রোডাক্টের পাশাপাশি আপনার নিজস্ব মার্চেন্ডাইজ এর প্রচারও করতে পারেন, আপনার নিজের ভিডিও এর মাধ্যমেই।

 

৫। অনলাইন কোর্স বিক্রি করে ইউটিউব থেকে আয়

আপনি যদি শিক্ষামূলক ইউটিউব চ্যানেল চালান, সে ক্ষেত্রে আপনি যা শেখান, তার সেরাটা দিয়ে তৈরী করতে পারেন অনলাইন কোর্স। এ ছাড়াও আপনার ভিডিও এর কোনো নির্দিষ্ট ব্যাপার যদি ভিউয়াররা শিখতে ইচ্ছুক হয়, সেক্ষেত্রে অনলাইন কোর্স সেল করা হতে পারেন, ইউটিউব থেকে আপনার আয়ের একটি উৎস।

 

৬। স্পন্সরড কনটেন্ট এর মাধ্যমে ইউটিউব থেকে আয়

আপনার চ্যানেলে যদি যথেষ্ট পরিমাণে সাব-স্ক্রাইবার থেকে থাকে, সে ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নিজ থেকেই আপনার সাথে স্পন্সরশিপ এর ব্যাপারে জানতে যোগাযোগ করতে পারে।

এছাড়াও আপনার ভিডিও এবং কোনো প্রতিষ্ঠানের প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের টপিক একই ধরণের হলে আপনিও উক্ত প্রতিষ্ঠানের সাথে স্পন্সরশীপ এর ব্যাপারে আলাপ করতে যোগাযোগ করতে পারে। স্পন্সরড কনটেন্ট বর্তমান সময়ে ইউটিউবারদের আয়ের প্রধান উৎস হয়ে দাঁড়িয়েছে। মূলত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের পণ্য বা সার্ভিস এর প্রমোশনের জন্য ভিডিও এর নির্দিষ্ট সেগমেন্ট বা সম্পূর্ণ ভিডিও অর্থের বিনিময়ে কিনে নেয়। পাশাপাশিও অনেক ধরণের স্পন্সরড কনটেন্ট ডিল রয়েছে।

 

৭। ডোনেশন এর মাধ্যমে ইউটিউব থেকে আয়

আপনার ইউটিউব চ্যানেল যদি ছোট হয় এবং ইউটিউবই আপনার একমাত্র কাজ ও আয়ের উৎস হয়ে থাকে, সে ক্ষেত্রে ফুলটাইম ইউটিউবিং আপনার জন্য চ্যালেঞ্জিং হতে পারে।

ছোটো কনটেন্ট ক্রিয়েটর, যারা ইউটিউব থেকে অন্য উপায়ে যথেষ্ট পরিমান আয় করতে পারে না, তারা সরাসরি সাব-স্ক্রাইবারদের কাছ থেকে আর্থিক সহায়তা নিতে পারে। প্যাট্রিয়ন এর মতো সাইট এই ব্যাপারটিকে অনেকটা সহজ করে দিয়েছে।

 

ইউটিউব থেকে আয় সম্পর্কিত সাধারণ প্রশ্নের উত্তর

ইউটিউব প্রতি ১০০০ ভিউতে কত টাকা দেয়?
প্রতি ১০০০ ভিউতে ইউটিউব ৩–৫ ডলার, যা বাংলাদেশী টাকায় ২৫০–৪০০ টাকা বা কমবেশি হতে পারে। এটা নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়।

ইউটিউব থেকে আয় কি হালাল?
ভিডিওতে বিজ্ঞাপন দেখানোর মাধ্যমে ইউটিউব আয় করে ও তা কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের সাথে শেয়ার করে থাকে। আপনার ভিডিও বা বিজ্ঞাপনে ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক কিছু দেখালে, তাতে সমস্যা হতে পারে।

আপনার চ্যানেলের কনটেন্ট এবং প্রদর্শিত বিজ্ঞাপনের ব্যাপারে একজন প্রসিদ্ধ আলেমের সাথে কথা বললে আপনি সহজেই এই প্রশ্নের উত্তর পাবেন।

ইউটিউব থেকে কিভাবে টাকা তুলবো?
ইউটিউব থেকে ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমে সহজেই টাকা তোলা যায়।

তো প্রিয় ভিজিটর আশা করছি আপনাদের কাছে আজকের এই পোস্ট টি ভালো লেগেছে। যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই কিন্তু কমেন্ট করে জানাবেন। এবং আমাদের সাইটে এরকম আরো অনেক হেল্পফুল পোস্ট রয়েছে সেগুলো পড়তে চাইলে আমাদের সাইট টি একবার ভিজিট করুন। আর আজকের মতো এখানেই বিদায়, ভালো থাকবেন সুস্থ্য থাকবেন।

Share the article..

Leave a Comment